নেপালের বিপক্ষে ৩-১ ব্যবধান গড়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের নারীরা। ২০০৩ সালে সাফ ফুটবলে জয় এনে দিয়েছিলো বাংলাদেশের পুরুষ দল। এবার ১৯ বছর পর বাংলাদেশকে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ এনে দিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) নেপালের দশরথ স্টেডিয়ামে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ১৩ মিনিটে সূচনা গোলটি করেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। এরপর ৪০তম মিনিটে দারুণ এক শটে গোলকিপারকে পরাস্ত করে হাফ টাইমের আগেই ২-০ ব্যবধান গড়ে দেন কৃষ্ণা রানী সরকার। পরবর্তীতে ৬৯ মিনিটে বাংলাদেশের জালে বল পাঠাতে সক্ষম হয় নেপালের আনিতা বাসনেট। এতে ব্যবধান কমলেও শেষ সময়ে কৃষ্ণা রানী সরকারের গোলে ৩-১ ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নেয় বাংলাদেশ।
সকাল থেকেই নেপালের দশরথ স্টেডিয়ামে বৃষ্টি। মাঠের অবস্থা ছিল খুবই খারাপ। বৃষ্টিতে কাঁদা জমে গেছে। এমন দিনে ফাইনালে নেপালের বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ দল। কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের প্রথম মিনিটেই আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। বক্সের বাইরে থেকে মারিয়া মান্ডার দুর্দান্ত শট ফেরান নেপালের গোলকিপার। স্বাগতিক নেপালেও কম নয়। খেলার ৯ মিনিটেও তারাও আক্রমণে আসে। বাংলাদেশের গোলরক্ষক রূপনা চাকমার দৃঢ়তায় বেঁচে যায় বাংলাদেশে। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে শুরু থেকেই জমে ওঠে ম্যাচ। খেলার ১০ মিনিটে সিরাত জাহান স্বপ্নাকে উঠিয়ে শামসুন্নাহার জুনিয়রকে মাঠে নামায় কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। যদিও ম্যাচের আগের দিন চোট নিয়ে ফাইনালে খেলার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন স্বপ্না। তার আশা পূরণ করেন কোচ। মাঠে নেমে চমক দেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। খেলার ১৩ মিনিটে এগিয়ে দেন বাংলাদেশকে (১-০)। কর্নার পাশ থেকে মনিকা চাকমার বাড়ানো বলে কোনাকোনি শটে গোল করেন এই ফরোয়ার্ড। এরপর ৪০ মিনিটে গোলকিপারকে পরাস্ত করে নেপালের জালে বল পাঠান কৃষ্ণা রানী। ২-০ ব্যবধানেই শেষ হয় প্রথমার্ধ।
পরবর্তীতে ৬৯ মিনিটে নেপালের হয়ে বাংলাদেশের ডিফেন্সকে ফাঁকি দিয়ে দলের পক্ষের একমাত্র গোলটি করেন আনিতা বাসনেট। এ সময় উজ্জীবিত নেপালকে নামলাতে কিছুটা হিমশিম খেতে হলেও শেষ পর্যন্ত সামলে নেয় বাংলাদেশের মেয়েরা। উল্টো শেষ ৬ মিনিটে নেপালের জালে দ্বিতীয়বার বল পাঠান কৃষ্ণা রানী।
শুরু থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে ছিলো বাংলাদেশ। একের পর এক আক্রমণে নাজেহাল হয় নেপালের রক্ষণভাগ। ফল আসে ১৩ মিনিটেই। প্রায় ৩০ মিনিট পর ম্যাচে ফেরার চেষ্টা শুরু হয় নেপালের। ৩৪ মিনিটে আক্রমণ করে তারা বাংলাদেশের রক্ষণভাগে। বাংলাদেশের দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে তাদের আক্রমণকে এ সময় ব্যর্থ করে দেন বাংলাদেশ দলের গোল রক্ষক।
নারী সাফের ষষ্ঠ আসরে দ্বিতীয়বার ফাইনাল খেলছে বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৬ সালে শিলিগুড়ি সাফের ফাইনালে ভারতের কাছে হারতে হয় ৩-১ ব্যবধানে। আজ শিরোপা জয়ের চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা নিয়েই মাঠে নেমেছিলো সাবিনা খাতুনেরা। শিরোপা নিয়েই তারা দেশে ফিরতে চেয়েছিলেন। জয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হলো নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে।