রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৩ অপরাহ্ন
তীব্র গরমে মানুষ যখন হাঁসফাঁস করছে, তখন ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে দেশবাসীকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এদিকে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটে দেশের বিভিন্ন এলাকার শিল্পকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্যও। গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের স্থায়ী সমাধান না হলে রপ্তানি খাতে এর প্রভাব পড়বে, এটা স্পষ্ট। জানা যায়, বর্তমানে জ্বালানির অভাবে চাহিদামতো বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। ডলার সংকটের কারণে বর্তমানে জ্বালানি খাতের সমস্যা আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির চাহিদা। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ ও গ্যাস পাওয়া না গেলে শিল্পোদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীরা কতটা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন, তা সহজেই অনুমেয়। রপ্তানি খাতকে চাঙা রাখার জন্য গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
২০৩০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে বড় ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় জ্বালানি সংকট অব্যাহত থাকলে এ লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়। এ পরিপ্রেক্ষিতে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, আমাদের দীর্ঘমেয়াদে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দেওয়া উচিত। আধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিবেশগত বিরূপ প্রভাব থেকে মুক্ত। অবশ্য বিভিন্ন দেশ কী প্রক্রিয়ায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও পরিচালনা করছে, সে অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে লাগানো উচিত। আমাদের দেশের মজুত কয়লা উত্তোলনেও গুরুত্ব বাড়াতে হবে।
রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরের সড়কে ছোট ছোট দোকানে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়টি দৃশমান চুরি হলেও তা বন্ধে কর্তৃপক্ষের কোনো তৎপরতা দৃশ্যমান নয়। দেশে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়টিকে উপেক্ষা করা অনুচিত। বিদ্যুৎ ও গ্যাস খাতে দুর্নীতি ও অপচয় রোধ করা গেলে দেশবাসী ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা থেকে কিছুটা মুক্তি পাবে। বিদ্যুৎ খাতে ‘সিস্টেম লস’-এর নামে যেসব দুর্নীতিবাজ মোটাতাজা হচ্ছে, তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।