একুশে ডেস্ক:
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক অনেক সূচকে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে। এটি আমাদের বড় অর্জন। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি সমীক্ষায় পরিণত হয়েছে, যা খুব কম অর্থনীতিবিদই অনুমান করেছিলেন।
২০০৬ সালে বাংলাদেশ যখন জিডিপির প্রবৃদ্ধি হারে পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল, তখন অনেকেই এটিকে একটি আকস্মিক সাফল্য হিসেবে খারিজ করেছিলেন। কিন্তু তখন থেকে প্রতি বছরই পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। এখন বিশ্বে র সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ।
সামষ্টিক-অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ভিত্তিতে বাংলাদেশের অর্থনীতি ৫০ বছরে ২৭১ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের সফল যাত্রা একটি ভালো উদাহরণ এবং মাত্র দুই দশকে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সূচকে পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে। গত ২০ বছরে, বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ৫০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা পাকিস্তানের তুলনায় আড়াই গুণ।
অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সূচকে ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। ওয়াশিংটনভিত্তিক কনজারভেটিভ থিঙ্কট্যাঙ্ক দ্য হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে ৫৬.৫ স্কোর করে বাংলাদেশের অবস্থান ১২০তম। বাংলাদেশের সমান স্কোর নিয়ে ১২১তম অবস্থানে আছে ভারত। পাকিস্তানের অবস্থান ১৫২তম।
বৈশ্বিক শান্তি সূচকে ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিভিত্তিক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিস (আইইপি) প্রকাশিত সর্বশেষ বৈশ্বিক শান্তি সূচকে (জিপিআই) ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ।
স্বাধীন বাংলাদেশের অর্থনীতির যাত্রা শুরু হয় ১৯৭২ সালে। সে সময়ে অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে ভারত ও পাকিস্তান এগিয়ে ছিল। আজ ৫০ বছর পর প্রায় প্রতিটি সূচকেই তারা বাংলাদেশ থেকে পিছিয়ে আছে। এটাই আমাদের স্বাধীনতার বড় অর্জন। যেকোনো দেশের উন্নয়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ধরা হয় মানবসম্পদ, যাতে আমরা শুধু পাকিস্তান নয়, অনেক ক্ষেত্রে ভারত থেকেও এগিয়ে আছি। নারীশিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, নারীর ক্ষমতায়ন, মা ও শিশুমৃত্যুর হার হ্রাসে বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে অনেক এগিয়ে গেছে।
বিশ্ব মন্দায় কঠিন সময় মোকাবিলা করছে গুটিকয়েক বাদে বিশ্বে র সব দেশ। বাংলাদেশেও এ ধকল অনুভূত হচ্ছে প্রবলভাবে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার সময় বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল তলানিতে। অতিযোগ্য ওয়ান-ইলেভেনি শাসনের কারিশমায় অর্থনীতি ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছিল। তারপর থেকে বাংলাদেশের ইতিহাস এগিয়ে যাওয়ার। এমনকি এই মহামন্দাকালেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দুনিয়ার সবচেয়ে সমৃদ্ধ এবং সেরা অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে যাদের ধরা হয় তাদের চেয়েও ঢের বেশি। বাংলাদেশের জোর কদমে এগিয়ে যাওয়া বিশ্ব মোড়লদের গাত্রদাহ শুরু করেছে। এ দেশকে কীভাবে ঠেকানো যায় তা নিয়ে শুরু হয়েছে নানা কারসাজি। তবে বাংলাদেশকে যে হারানো যাবে না, সে সত্যটি তুলে ধরা হয়েছে গোল্ডম্যান শ্যাক্সের প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, ২০৭৫ সাল নাগাদ বিশ্বে র ১৬তম অর্থনীতির দেশ হবে বাংলাদেশ।