একজন প্রবাসী তার আয় করা অর্থ যখন তার পরিবারের সহায়তার জন্য দেশে পাঠান সেটাকে রেমিট্যান্স বলে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য বৈদেশিক সম্পদ অর্জনের অন্যতম প্রধান উৎস হলো রেমিট্যান্স। অর্থনৈতিক উন্নয়নে রেমিট্যান্সের অবদান মোট জিডিপির ৪.৬ শতাংশ এবং বিশ্বে রেমিট্যান্স পাঠানোর দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম।
তৈরি পোশাকের পরে অর্থনীতিতে প্রবাসীদের রেমিট্যান্সের অবদান সবচেয়ে বেশি, অর্থাৎ দ্বিতীয় স্থানে আছে। জাতীয় অর্থনীতিতে পণ্য বাবদ যে অর্থ উপার্জিত হয়, এর বড় অংশ কাঁচামাল আমদানিতে বা উপযোগী করে তুলতে চলে যায়। কিন্তু জনশক্তি রফতানি এমন এক অর্থনীতির খাত, যার উপার্জিত বৈদেশিক মুদ্রার পুরোটাই জাতীয় অর্থনীতিতে মূল্য সংযোজন করে।
ঈদ উৎসবকে কেন্দ্র করে কুরবানির পশুসহ প্রয়োজনীয় অন্য সব কেনাকাটা করতে অন্যবারের মতো এবারও পরিবার-পরিজনের কাছে বেশি টাকা পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ঈদের কারণে গত মাসে রেমিট্যান্স আহরণে বেশ ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। ঈদের পরও রেমিট্যান্সের সে ভালো গতি ধরে রাখা গেছে।
সোমবার সময়ের আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যাওয়া প্রবাসীরা নতুন অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ের প্রথম ১৪ দিনে ৯৯ কোটি ৫৫ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। রেমিট্যান্সের এ অঙ্ক এযাবৎকালের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। চলমান এই ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে প্রবাসী আয় ২০০ কোটি ডলার ছাড়াবে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য মতে, এ বছর রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধির হার নির্ভর করছে ধনী দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশে^র অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। এই যুদ্ধ যদি আরও দীর্ঘায়িত হয় তা হলে তেলের দাম ও মুদ্রার বিনিময় মূল্য আরও অস্থির হবে, যা সার্বিকভাবে বৈশ্বিক অর্থনীতিকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তাদের অনুমান চলতি বছরে প্রবৃদ্ধির হার অন্তত ২ শতাংশ কমে যাবে। ফলে নিম্ন আয়ের দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে শঙ্কা বিশ্বব্যাংকের।