এডিস মশা দ্বারা আক্রান্ত হয়ে ডেঙ্গুজ্বরের প্রভাব দেখা যায়। বর্ষাকাল এলেই যেন বিদ্যুৎ গতিতে বেড়ে যায় ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ। জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে চলে যায়। বর্ষার ফলে যেমন বৃষ্টির মাত্রা বেড়ে যায় তদ্রূপ জন্ম নেয় এডিস মশা।
এডিস মশা বৃদ্ধির ফলে ঝুঁকি বেড়ে চলছে ডেঙ্গুর কবলে পড়ার। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ খুব বেশি প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি, অনেকটাই সহনশীল পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু সারা দেশের কেন্দ্রবিন্দু ঢাকাতে যেন ডেঙ্গুর ছড়াছড়ি। রীতিমতো ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে এবং সংক্রমিত হচ্ছে অনেক মানুষ। এতে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে যাচ্ছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে জ্বর হলেই নিজ দায়িত্বে ডেঙ্গু টেস্ট করে নেওয়া বুদ্ধিমানের পরিচয় বহন করে। দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণে ডেকে আনতে পারে মহাবিপদ এবং একটা পরিবারে নেমে আসতে পারে আকস্মিক আঁধার। কারণ ডেঙ্গুজ্বরে খুব দ্রুত প্লাটিলেট মাত্রা কমতে শুরু করে, যা একজন সুস্থ মানুষের জন্য বিপদের কারণ।
রক্তের প্লাটিলেটের স্বাভাবিক মাত্রা দেড় লাখ থেকে শুরু করে সাড়ে চার লাখ পর্যন্ত। যদি ১৫-৩০ হাজারে নেমে আসে খুব বিপজ্জনক, দ্রুত রক্ত দিতে হয়। এত নিচে আসার ফলে রোগী মারাও যেতে পারে। তাই অবহেলা না করে নিজ দায়িত্বে ডেঙ্গু নির্ণয় করতে হবে এবং সুস্থতার জন্য ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।
এ বছর এখন অবধি ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ ১৯ জনের মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ১১৪ জনের। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কপালে চোখ উঠে যাওয়ার মতো, ২২,৪৬৭ জন ধুঁকছে ডেঙ্গুর প্রকোপে। গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৩৮২, তন্মধ্যে ২৮১ জনের মৃত্যুর কাছে আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে। ২০১৯-এর চিত্রটা যেন আরও ভয়াবহ, সেবার এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়, যা এ যাবত কালের মধ্যে সর্বোচ্চ। সরকারি এক হিসাবে সে বছর মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জন।