জ্বালানি সংকট থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায় নবায়নযোগ্য উৎস। পৃথিবীর প্রতিটি দেশ এখন সেদিকেই ঝুঁকছে। উন্নত বিশ্বে অনেক দেশ তাদের ব্যবহৃত জ্বালানির ৩০ শতাংশ পর্যন্ত নবায়নযোগ্য উৎস থেকে জোগান দিচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে তার এক-তৃতীয়াংশও বাস্তবায়ন করতে পারেনি।
দেশে অকৃষি জমির অপ্রতুলতা রয়েছে। ১ মেগাওয়াট সোলার ফার্ম স্থাপনে ৩ একর জমির প্রয়োজন হয়। তা ছাড়া নির্দিষ্ট বা পরিমাণ মতো সূর্যের আলো পাওয়ার প্রয়োজনীতা রয়েছে। তবে সোলার প্যানেলের দক্ষতা দিন দিন বাড়ছে, দামও কমছে। পরিবেশবান্ধব বিদ্যুতের একটি হচ্ছে-সৌরবিদ্যুৎ। দেশে সৌরবিদ্যুতের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নে ধীরগতির কারণে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছানো যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে বেসরকারি উদ্যোক্তারা সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে ঝুঁকছেন। আগামী ১ বছরের মধ্যে ১ হাজার মেগাওয়াট, ২০৩০ সালের মধ্যে চাহিদার ১৫ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কাজ করছে সরকার।
অকৃষি জমিতে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের আইন করা হয়েছে। অভিজ্ঞ মহলের মতে, জনবহুল দেশ হলেও এ পরিমাণ অকৃষি জমি খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন নয়। ভূমি মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী দেশে যে পরিমাণ খাসজমি আছে তার ৫ শতাংশ ব্যবহার করে ২৮ হাজার ১০৬ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ২২ হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন খরচ আগের তুলনায় অনেক কমেছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিতকল্পে একটি সুনির্দিষ্ট আইন ও সুস্পষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ প্রয়োজন। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি ভবনের ছাদে রুফ টপ সোলার প্যানেল বসানো বাধ্যতামূলক করা দরকার। জমির সংকট কাটাতে অব্যবহৃত অকৃষি জমিকে কাজে লাগতে হবে।