বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৮ অপরাহ্ন

কিশোরগঞ্জের সূর্যসন্তান-শহীদ খাইরুল জাহান বীরপ্রতীক

কিশোরগঞ্জের সূর্যসন্তান-শহীদ খাইরুল জাহান বীরপ্রতীক

শহীদ খাইরুল জাহান (বীর প্রতীক) একটি নাম, একটি ইতিহাস ও একটি রক্তস্নাত আত্মত্যাগ। কৃতি ছাত্র খরমপট্টি (নীলগঞ্জ মোড়) নিবাসী শহীদ খাইরুল একাত্তর সনে ময়মনসিংহ পলিটেকনিক্যাল মহাবিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র। একাত্তর সনের ২৭ শে মার্চ পাকিস্তান বিমান বাহিনী থেকে একজন ক্যাডেট হিসেবে প্রশিক্ষণের জন্য চিঠি আসে তাঁর বাড়িতে। কিন্তু দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ব হয়ে- ব্যক্তিগত জীবনের প্রতিষ্ঠাকে জলাঞ্জলি দিয়ে- খাইরুল মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বর্ডার ক্রস করে এবং ২নং সেক্টরের অধীনে- বিগ্রেডিয়ার খালেদ মোশারফের তত্ত্বাবধানে মেঘালয়ের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। অত:পর একজন গ্রুপ কমান্ডার হিসেবে বিভিন্ন যুুদ্ধে অংশগ্রহণ করে এবং বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করে। অবশেষে নভেম্বর মাসে তার ঘনিষ্ঠ সহযোদ্ধাদেরকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি লতিবপুরে অবস্থান করে। ২৭ শে নভেম্বর চরপুমদী বাজারের নিকট রাজাকারদের একটি ঘাটি ধ্বংস করার জন্য পরিকল্পনা করে। কিন্তু রাজাকাররা পূর্বেই খাইরুলের অপারেশনটির কথা জেনে কিশোরগঞ্জের পাকবাহিনীকে অবগত করে। ঐ দিনই কাক ডাকা ভোরে, খাইরুলের বাহিনীকে চরপুমদী বাজারের নিকট হায়েনারা ঘিরে ফেলে। তখন খাইরুল নিজ দলকে বাঁচানোর জন্য ফায়ারিং কভার করে। এভাবে তার দলের সকলেই বেঁচে যায় কিন্তু খায়রুল আহতবস্থায় পাকবাহিনীর হাতে ধরা পরে। অর্ধমৃত খাইরুলের দেহ ট্রাকের সাথে বেঁধে কিশোরগঞ্জ শহরে আনা হয়। তখন কিশোরগঞ্জের কুখ্যাত দালাল মুসলেহউদ্দিনের ছেলে কিং হোসেন তার দলবল সহ খাইরুলের লাশকে রিক্সায় নিয়ে সারা শহর প্রদক্ষিণ করে এবং উল্লাস প্রকাশ করে। তার রক্তমাখা জামাকাপড় তার মায়ের কাছে ফেরত দিয়ে দেয় এবং দম্ভোক্তি, ভয়ভীতি প্রকাশ করে। তার বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তাঁকে ‘বীরপ্রতীক খেতাবে’ ভূষিত করে। এছাড়াও শহীদ খাইরুলের নামে ময়মনসিংহ পলিটেকটিক্যালের একটি ছাত্রাবাসের নামকরন করা হয়। বিজয়ের মাসে খায়রুল তোমায় লাল সালাম।

 

শাফায়েত জামিল রাজীব
-সম্পাদক
একুশে টাইমস্ নিউজ মিডিয়া
এন্ড ইউটিউব চ্যানেল।

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana