মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:১৪ পূর্বাহ্ন

ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন (১৯৫৭)

ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন (১৯৫৭)

চুয়ান্ন-তে যখন আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হলো এবং যুক্তফ্রন্টের প্রতীক ‘নৌকা’ মার্কা ২৩৭ টি আসনের মধ্যে ২২৩টি আসনে জয়লাভ করল। তখন ক্ষমতাসীন মুসলীমলীগ সরকারের চোখ চরকগাছে উঠল। যদিও যুক্তফ্রন্টের অন্যতম শরিকদল কে.এস.পি নেতা শেরে বাংলা ফজলুল হক মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন; তবুও কেন্দ্রীয় মুসলিমলীগ সরকার অল্পদিনের মধ্যেই তাকে অপসারণ করল। এভাবে মুসলিমপন্থী নেতা খাজা নাজিম উদ্দিন, নূরুল আমিন প্রমুখের কূটচালে যুক্তফ্রন্ট খন্ডিত হলো। এবার ক্ষমতাসীনদের চোখে পড়ল, গন-মানুষের দল আওয়ামীলীগের উপর। আওয়ামীলীগ সভাপতি মাওলানা ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবের মধ্যে ষড়যন্ত্রমূলক দ্বন্দ্ব শুরু করার প্রয়াস চালানো হলো। যার ফলশ্রুতিতে ’৫৭ তে আওয়ামীলীগের কর্ণধার হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর উপস্থিতিতে মাওলানা ভাসানী টাঙ্গাইলের কাগমারী তে এক বিশেষ সম্মেলন ডাকলেন যা ‘কাগমারী সম্মেলন’ নামে ইতিহাসে খ্যাত। ঐ সম্মেলনে বৈদেশিক নীতির দলীয় আদর্শ নিয়ে বিতর্কের জন্ম হলো। মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বধীন উপদলটি সমাজতন্ত্রে বিশ^াস স্থাপন করল আর শেখ মুজিব বাঙালী বাঙালী জাতীয়তাবাদ এবং গণতন্ত্রে বিশ^াস স্থাপন করে মূল দলেই থেকে গেলেন। তখন দলের সভাপতি পদটি অলংকৃত করলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ। অতপর: আমাদের স্বাধীকার ও মুক্তির সংগ্রামের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, শেখ মুজিবের অনুসৃত বাঙালী জাতীয়তাবাদী চেতনাই ’৬৬ এর ছয় দফা, ’৬৯ ছাত্র সমাজের ১১ দফা, ’৭০ এর নির্বাচনে নিরংকুশ বিজয় গাঁথা এবং নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়- একমাত্র বাঙালী জাতীয়তাবাদের বিকাশের পরিস্ফুটন ঘটিয়েছিল। আর বাঙালী জাতীয়তাবাদী চেতনাই আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধকে জনযুদ্ধে পরিনত করেছিল; সেখানে সকল ধর্মের, সকল
বর্ণের, সকল শ্রেণির মানুষের অংশগ্রহণ ছিল। তাই আমাদের বিজয়ও ছিল অবধারিত। অন্যদিকে তোয়াহা, অলি আহাদ, কাজী জাফর, মসিউর রহমানের মতো প্রমুখ রাজনীতিবিদরা ভাসানীর নেতৃত্বে ন্যাশনাল আওয়ামীলীগ (ন্যাপ) গঠন করল।

 

শাফায়েত জামিল রাজীব

-সম্পাদক,

একুশে টাইমস্ নিউজ মিডিয়া।

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana