রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:০৯ পূর্বাহ্ন

পোশকী রাজনীতি


গল্পটি ব্যাঙ্গাত্নক ও রুপক অর্থে লেখা ।সমসাময়িক রাজনীতিক প্রেক্ষাপট ও তথ্য উপাত্ত  থেকে নেওয়া একটি বিশ্লেষনধর্মী রচনা]

গ্রামটির নাম কালিকাপ্রসাদ – মেঘনাতীরে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী জনপদ ।এই গ্রামে বসবাস অষ্টাদশী ও ষোড়শী কন্যা মালেকা ও  সালেকার । বছর পাঁচেক পূর্বে গ্রাম্য মেয়ে মালেকার সাথে বিয়ে হয় পাশ্বর্বতী ভৈরবপুর গ্রামের ইডপি মেম্বার কলিমউদ্দিনের ।কলিমউদ্দিন ও সলিমউদ্দিন দুই সহোদর ভাইয়ের । বছর দুয়েক পূর্বে সলিম উদ্দিন বড়ভাইয়ের শালী সালেকাকে বিয়ে করে । এই সুবাদে দু’ভাই পরস্পর ভাইরা ভাই বটে । যেন পপ সম্রাট আজমখানের ওরে মালেক ……..ওরে সালেকা গানের অনন্য প্রতিচ্ছবি ।

মেম্বার কলিমউদ্দিন ইউনিয়নের রাজনীতি সাথে সম্পৃক্ত ও সরকার দলীয় একটি অঙ্গ সংগঠনের নেতাবটে । তবে উনি টাকা রোজগার করতে পারেনা । অবশেষে বাস্তবতার যাঁতাকলে পড়ে -স্ত্রী মালেকার কথা মতো ভৈরববাজার থেকে ৭০০ টাকার একটি মুজিবকোর্ট কিনল। কোর্টটি যেন তাকে সৌভাগ্যের হাতছানি দিল । প্রথম দিন রাত্রে মেম্বার কলিমউদ্দিন সাহেব একটি সালিশী থেকে ঘুষ পেল ১২০০ (বারশত টাকা) । তাহলে মুজিবকোর্টের দাম বাদ দিয়েও ৫০০(পাচঁশত টাকা) লাভ হলো।রাত্রে বেলায় পাঙ্গাস মাছ ও লাল আলু কিনে বাড়িতে  ফিরলো।কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস বছর ঘুরতে না ঘুরতেই কলিমউদ্দিনের দল পদচ্যুত  হলো ।অবস্থা বেগতিক দেখে কলিমউদ্দিন নিজ বাড়িতে আত্নগোপন করলো।(চলবে………..)আগামীকাল দ্বিতীয় পর্ব 

কলিমউদ্দিন মেম্বার দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারনে কিছুদিন নরসিংদীর ভুলতা গ্রামে মামার আত্নগোপলে ছিল । অতঃপর পনের – বিশ দিন পর সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের কারনে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল হয়ে উঠলে – নিজ বাড়িতে দিরে আসে । তবে আগের মতো বিচার সালিশীতে মেম্বার সাহেবকে কেউ তেমন পাত্তা দেয় না । হঠাৎ মুজিব কোর্টের ব্যবসা নিম্নমুখী । অতঃপর কলিমউদ্দিন মেম্বার দিবা নিদ্রায় ব্যস্ত।

এবার দৃশ্য পটে আসল কলিমউদ্দিনের ছোট সলিমউদ্দিন। সেও এক বেকার

যুবক। অবস্থাদৃষ্ঠে তার স্ত্রী সালেকা বড়বোন মালেকা কেবল – আমার জামাই তো অন্য  পার্ঠির সমর্থক ও অনুগত। এখন যদি ভাইযান একটু বুদ্ধি দেয় তরে তাদের আর্থিক স্বচ্ছলতার শেষ থাকবেনা । অনেকটা একাদৃশে বৃহস্পতির মতো। বড় ভাই কলিনউদ্দিন রাত্রে স্ত্রীর কাছে ছোট ভাইয়ের মনোবাসনা  শুনে – পরদিন সকালে ছোট ভাই সলিমুউদ্দিন কে ডেকে বলল- যেহেতু বর্তমানে তোমার দল দেশের ক্ষমতায় আসীন । তথাপি আজ বিকালেই ভৈরব বাজার থেকে জোবরা কিনে নিয়ে আস। তাহলে তোমার ভাগ্যের চাকা ঘুরে যাবে । বড় ভাইয়ের পরামর্শ অনুযায়ী ছোটভাই খলিমুদ্দিন বিকালে গঞ্জে গিয়ে জোবরা কিনল। পাশাপাশি দূরদর্শী ধ্যান-ধারনার সুবাদে একটি কালো সানগ্লাস ও কিনে ফেলল। অতঃপর বাড়ীতে এসে পরদিন সকালে বড়ভাইকে সালাম করে উনার পথে হাঁটতে হাঁটতে লাগল । আর জনগন ভবিষ্যৎ নেতার চালচলনের দিকে চেয়ে থাকল।

সম্পাদক,একুশে টাইমস

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana