শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:০১ পূর্বাহ্ন
একুশে ডেস্ক :
রাজধানীতে ভয়ংকর প্রতারক চক্রের সন্ধান মিলেছে। তারা একজনের তথ্য দিয়ে অন্যজনের নামে সিম কেনার পর নগদ, বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলে। পরে সেই নাম্বার থেকে জিনের বাদশাহ, সরকারি কর্মকর্তা, বিকাশ-নগদ কর্মকর্তা সেজে প্রতারণা করে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেফতার করে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ। ২০২২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর মিরপুর মডেল থানার একটি মামলা তদন্ত করতে গিয়ে এই চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়।
চক্রটির কাছ থেকে বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর কোম্পানির ২১৪টি সিমকার্ড, একটি ল্যাপটপ, আটটি স্মার্ট ফোন, দুটি ট্যাব, পাঁচটি বাটন ফোন; ‘নগদ পকেট ডাক্তার’ সংবলিত ডিসকাউন্ট কার্ড ৫০০টি; ‘গ্রিন বাংলা আরকেআর’ লেখা সংবলিত কার্ড হ্যাঙ্গার, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, স্যালারি শিট ও টি শার্ট, বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তার সিল, ভুয়া পুলিশ কার্ড, ভুয়া সাংবাদিক কার্ড, নগদ-ডাকবিভাগের ডিজিটাল লেনদেনের কার্ড, বিভিন্ন ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
মিরপুর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মোহসীন বলেন, চক্রটি মূলত তিন ধাপে প্রতারণা করে। প্রতিটি ধাপেই আলাদা আলাদা গ্রুপ কাজ করে। প্রথম গ্রুপ বিভিন্ন মানুষের জাতীয় পরিচয়পত্র, আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে। এই গ্রুপ তাদের এসব তথ্য দ্বিতীয় গ্রুপের কাছে বিক্রি করে দেয়। দ্বিতীয় ধাপে এই গ্রুপ এসব তথ্য দিয়ে সিম কেনে এবং বিকাশ ও নগদ অ্যাকাউন্ট খোলে। এরপর এসব সিম তারা উচ্চমূল্যে বিক্রি করে দেয় তৃতীয় গ্রুপের কাছে। আর তৃতীয় গ্রুপ এসব সিম ব্যবহার করে কখনো জিনের বাদশাহ, কখনো বিকাশ বা নগদ অ্যাজেন্ট, আর কখনোবা বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা সেজে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে।
প্রতারক চক্রে রয়েছে মোবাইল ব্যাংকিং কর্মকর্তা: গ্রেফতার জোবায়ের ও সাব্বির বিকাশের ডিএসএস (ডিস্ট্রিবিউটর সেলস সুপারভাইজার) এবং মোক্তার হোসেন ও অন্তু দে ডিএসও (ডিস্ট্রিবিউটর সেলস অফিসার)। তারা তাদের কাছে থাকা পাসওয়ার্ড অ্যাজেন্টের কাছে দিয়ে দেয়। ফলে অ্যাজেন্ট সহজেই অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলতে পারে।
প্রতারণার মাধ্যমে সংগৃহীত এসব সিম দিয়ে চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন মানুষকে ফোন করে টাকা হাতিয়ে নেয়। তারা কখনও জিনের বাদশাহ সেজে ফোন দেয়। কখনও পুলিশের এসপি সেজে মামলা থেকে ছাড়িয়ে দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেয়। আবার কখনো বিকাশ কিংবা নগদের কর্মকর্তা সেজে প্রতারণা করে।