’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে ময়মনিংহ ও টাঙ্গাইল জেলা এবং যুমনা নদীর তীরাঞ্চল নিয়ে গঠিত ১১নং সেক্টরের অধিনায়ক ছিলেন পাকিস্তান সেনা বাহিনীর স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপের অফিসার মেজর আবু তাহের। পশ্চিম পাকিস্তানের কোয়েটা থেকে পালিয়ে তিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। তিনি ১৯৭০ সাল থেকে কোয়েটার স্কুল অব ইনফ্যান্ট অ্যান্ড ট্যাকটিকস্ এ উচ্চতর প্রশ্ক্ষিণ গ্রহণ করেছিলেন। প্রথমে কাশ্মীরের পাহাড় অঞ্চল দিয়ে পালানোর ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর; পাকিস্তানের শিয়ালকোর্ট এলাকা দিয়ে মেজর জিয়াউদ্দিন, মেজর মঞ্জুর ও অন্য দু’জন বাঙালী অফিসার সহ জুলাই মাসে ভারতে পালিয়ে আসেন। তারপর আগস্ট মাসে ১১নং সেক্টরের ভৌগলিক অবস্থান নির্ধারণ করে সেখানে যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ‘৭১ সালে ১৪ নভেম্বর কামালপুর যুদ্ধে শত্রুপক্ষের শেলের আঘাতে মারাত্মকভাবে আহত হন এবং তার একটি পা হারায়। পরবর্তী সময়ে ১১নং সেক্টরের কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত হন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট হামিদুল্লাহ খান।
আবু তাহেরের জন্ম ১৯৩৮ সালের ১৪ নভেম্বর। ১৯৬০ সালে পািকস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করে তিনি। ১৯৬৫ তে যোগ দেন স্পেশাল কমান্ডো সার্ভিসে। যুদ্ধের পর ‘৭২ সালের অক্টোবরে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ কমান্ড থেকে সরিয়ে আর্থিক লাভজনক উচ্চ পদে প্রমোশন দেয়া হলে, তা গ্রহণ না করে সেনাবাহিনী থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। সেসময় নবগঠিত রাজনৈতিক দল জাসদের সহ-সভাপতি পদ গ্রহণ করেন তিনি। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সংঘটিত সিপাহী জনতার অভ্যুত্থানের প্রধান ব্যক্তি ছিলেন আবু তাহের। জিয়া কর্তৃক সামরিক আইনে ১৯৭৬ সালের ১৭ জুলাই ভোর রাতে এক ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসী দেয়া হয় তাকে।
শাফায়েত জামিল রাজীব
-সম্পাদক
একুশে টাইমস্