বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২৩ পূর্বাহ্ন
মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ছিলেন একজন ডাকসাইটে রাজনীতিবিদ । মাওলানা ভাসানী ‘ইসলামী সাম্যবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। তাই কৃষক-শ্রমিক-তাঁতী-কুমার জেলে প্রভৃতি খেটে খাওয়া সর্বহারা মানুষের সাথে ছিল তাঁর নিবিড় সম্পর্ক। মাওলানা ভাসানী ১৮৮০ সালে সিরাজগঞ্জ জেলার ধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। অত:পর উনি বসতি স্থাপন করেন আসামের ভাসান চরে এবং সেখানে ‘ভাসানচর উচ্চ মাদ্রাসা’ প্রতিষ্ঠা করেন। তখন ঐ এলাকার গণমানুষ তাদের প্রাণ প্রিয় নেতাকে ভাসানী উপাধি দেন। তখন ভাসানী সর্বহারা বাঙালিদের অধিকার আদায়ের জন্য আসামে ‘বাঙালী খেদাও’ আভযানের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ায়। ত্রিশের দশকে ভাসানী মুসলিমলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন এবং আসাম প্রাদেশিক মুসলিমলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
‘৪৭-এর দেশ ভাগের পর ‘৪৮ সনে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে আসেন। ‘৪৯ সনের ২৩শে জুন ঢাকায় সোহরাওয়ার্দীর তত্ত্বাবধানে ‘আওয়ামী মুসলিমলীগ’ নামে যে দলটি আত্মপ্রকাশ করে- ভাসানীকে সেই দলের সভাপতি, সামছুল হক সাধারণ সম্পাদক ও শেখ মুজিবকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনীত করা হয়। ‘৫৪তে যুক্তফ্রন্টের বিজয়ের নেপথ্যে ছিলেন ভাসানী। কিন্তু ‘৫৭ তে পররাষ্ট্র নীতি ংক্রান্ত বিষয়ে দ্বি-মত পোষন করে কাগমারী সম্মেলনের ডাক দেন। ঐ সম্মেলনে উনি আওয়ামীলীগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ন্যাশনাল আওয়ামীলীগ (ন্যাপ) গঠন করেন। ‘৫৯-এ মাওসেতুং এর আমন্ত্রনে চীন সফর করেন। ঊনসত্তরে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে শেখ মুজিব মুক্তিদানসহ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের’ জন্য ব্যাপী গণ-অভ্যুত্থানের সৃষ্টি করেন। এমনি প্রেক্ষাপটে উনি বলেছিলেন ‘ভোটের বাক্সে লাথি মারো, পূর্ব বাংলা স্বাধীন কর।’ একাত্তরে পাক বাহিনীর নারকীয় হত্যাকান্ড দেখে উনি ভারতে চলে যান। এবং সেখানে মুক্তিযুদ্ধকে বেগবান করার জন্য সর্বদলীয় উপদেষ্টা কমিটি গঠ করেন। এবং যার প্রধান উনি নিজেই ছিলেন। তখন তাঁর অনুসারী ‘ছাত্র ইউনিয়ন (চীনপন্থী)’ ছাত্র সংগঠন মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ‘৭৬-এ অসুস্থ্য অবস্থায় ভারতের নদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফারাক্কা বাঁধ অভিমুখে লংমার্চে নেতৃত্ব দেন। এই মহতি রাজনীতিবিদ ‘৭৬-এর ১৭ই মে মৃত্যু বরণ করেন।
সম্পাদক,একুশে টাইমস
শাফায়েত জামিল রাজীব