শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫৩ অপরাহ্ন

ডলারের বাজারে লক্ষণ ভালো, সুফল নেই: কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে

ডলারের বাজারে লক্ষণ ভালো, সুফল নেই: কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে পৃথিবীর কোনো দেশ স্বস্তিতে নেই। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। সারা বিশ্বে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, আমাদের এখানেও বেড়েছিল। এখনও বেশি আছে।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে বড় ঘাটতি চলছে আমাদের অর্থনীতিতে। বিশ্বের সব পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমরা একটি বড় ধাক্কা খেয়েছি। নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়েছে। জাহাজের ভাড়া বেড়ে গেছে।
ইতিমধ্যে ডলারের বিপরীতে আমাদের টাকার মান কমেছে। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে মূল্যস্ফীতি। আর সে জন্য আমাদের জনজীবনে এর বেশ প্রভাব পড়েছে।
এই দুই-আড়াই বছরে মানুষ খুবই কষ্ট পেয়েছে, এখনও কষ্ট পাচ্ছে। আরও কতদিন এই কষ্ট করে চলতে হবে, কেউ কিছু বলতে পারছে না।বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বলেছে, ২০২৩ সালটা আরও কঠিন। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে মন্দাও দেখা দিতে পারে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় নানা ধরনের পদক্ষেপ নেন নীতিনির্ধারকরা। ডলার-সংকট নিরসনে এর আগে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ করা হয়। দামি গাড়ি, প্রসাধনী, স্বর্ণালংকার, তৈরি পোশাক, গৃহস্থালিতে ব্যবহার্য বৈদ্যুতিক সামগ্রী, পানীয়সহ ২৭ ধরনের পণ্য আমদানিকে নিরুৎসাহিত করতে ব্যাংক ঋণ বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে এক বছরের ব্যবধানে পণ্য আমদানি কমেছে ২৫ বিলিয়ন ডলারের। ডলার সাশ্রয় হয়েছে।
দেখা যাচ্ছে, তছনছ হয়ে যাওয়া বিশ্ব অর্থনীতিতেও রফতানি আয়ের ইতিবাচক ধারা আমরা অব্যাহত রাখতে পেরেছি। নানা বাধা-বিপত্তি ও চ্যালেঞ্জের মধ্যেও রফতানি আমাদের প্রত্যাশার চেয়েও ভালো হয়েছে।
গত এক বছরের ব্যবধানে দেশে রফতানি আয় যেমন বেড়েছে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলারের, তেমনি রেমিট্যান্সও বেড়েছে বিগত কয়েক মাসে। তবে বাস্তবে তার সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। দেশের বাজারে ডলার সংকট কাটছে না। বুধবার সময়ের আলোতে খবর এসেছে, দেশের ডলার বাজারে লক্ষণ ভালো, সুফল নেই।
দেশের সাধারণ মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে নাজুক পরিস্থিতির কারণ হিসেবে ডলার সংকটকে দায়ী করা হয়। কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতির পরও ব্যাংকগুলোতে ডলার সংকট এখনও প্রকট। চাহিদামতো এলসি বা ঋণপত্র খোলা যাচ্ছে না। ব্যাংকগুলো সময়মতো এলসি দায় ও বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না।
বিশ্ববাজারে ডলার কিছুটা দুর্বল হয়েছে, দেশে আমদানি কমেছে, রফতানি বেড়েছে এবং রেমিট্যান্সও ভালো আসছে। এসব কারণে দেশের বাজারে ডলারের সংকটময় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ার দরকার ছিল। কিন্তু সময়ের আলোর প্রতিবেদনটিতে স্পষ্ট, সেটি হয়নি এখনও। আমরা প্রত্যাশা করি, বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং নীতিনির্ধারকরা আরও কার্যকর ও জোরালো ভূমিকা গ্রহণ করবে।
Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana