মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের আপামর জনগণের কাছে অতি প্রিয় জাতীয় মাছ ইলিশ ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। সারা বছরই ইলিশের যে দাম থাকে তা নিম্নবিত্ত কেন মধ্যবিত্তের মানুষ কিনে খেতে পারে না।
ভরা বর্ষার মৌসুম চলে গেছে, দীর্ঘ ৬৫ দিন ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞাও শেষ হয়েছে, এরপরেও বাজারে ইলিশের তেমন দেখা মেলেনি বেশ কিছু দিন। বৈরী আবহাওয়ার কারণে জেলেরা ইলিশ ধরতে সাগরে যেতে পারেনি। সামান্য যা কিছু ধরা পড়েছে তা ছিল দুর্মূল্য। অনেকে অবশ্য বলছেন, সাগরে ইলিশ মাছ কমবেশি সব সময়েই ধরা পড়ে। কিন্তু সাগর থেকে বিক্রি হয়ে কোথায় চলে যায়, ইলিশ মোকামে আসে না! ক্রেতারাও তাই বাজারে ইলিশ চোখে দেখে না। তবে নদ-নদীর পানি কমে যাওয়া আর পানি দূষণের কারণে ইলিশের উৎপাদন কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তা নিশ্চিত করে বলা যায়। ১০ মিটার গভীর পানি ছাড়া বড় ইলিশ চলাচল না করার কারণে নদীকে ইলিশ কম আসে। এ ছাড়া নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও মা ইলিশ এবং ৯ ইঞ্চির ছোট আকারের জাটকা ধরে ফেলায় ইলিশের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সাগরে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৯ সাল থেকে সরকার প্রথমবারের মতো মে থেকে জুলাইয়ে ছোট নৌকাগুলোকে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার আওতায় নিয়ে আসে।
মাছের প্রজননকালীন দুই মাসের অধিক সময়ে সাগর ও নদী মোহনায় মাছ শিকার বন্ধ রাখা হলে দ্রুত ইলিশ ও সামুদ্রিক মাছ বংশবিস্তার লাভ করে। ফলে সাগরের বিশাল জলরাশি পোনা ইলিশে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এই সময়ে দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় সব ধরনের মৎস্য আহরণ, পরিবহন ও সংরক্ষণ নিষিদ্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া মা ইলিশ রক্ষার লক্ষ্যে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে প্রতি বছর ৭ অক্টোবর থেকে ২২ দিন সারা দেশের ৩৮ জেলায় নদীতে জাল ফেলা, ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকার, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মজুদ ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করা হয়। ইলিশ মাছ ডিম ছাড়ার পর জাটকা বড় হয়ে আবার সাগরে ফিরে যায়। পরে সেগুলো বড় হলে ডিম ছাড়ার জন্য আবার নদীতে চলে আসে।