শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:১২ পূর্বাহ্ন
মুক্তি সংগ্রামের শুরু এবং তার আগে থেকেই-বাংলাদেশের সঙ্গে অ্যান্থনী মাসকারেনহাসের নিবিড় যোগাযোগ ছিল। পাকিস্তানে বসবাসকারী দীর্ঘ অভিজ্ঞতাসম্পূর্ণ সাংবাদিক হিসেবে শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, খাজা নাজিমুদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ দেশের অন্যান্য প্রতিটি উল্লেখযোগ্য নেতার সঙ্গেই ছিল তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। ১৯৭১ সালে অ্যান্থনী মাসকারেনহাসই প্রথম সাংবাদিক, যিনি পাকিস্তান থেকে পালিয়ে গিয়ে লন্ডনের ‘দি সানডে টাইমস্’ পত্রিকায় তখনকার বাংলাদেশ ভূখন্ডে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নির্মম গণহত্যার কাহিনী সবিস্তারে লিখে- বিশ্ব জনমতের সামনে তুলে ধরে। তাঁর সেই প্রবন্ধ এবং পরবর্তী রচনাগ্রন্থ ‘দ্যা রেইপ অব বাংলাদেশ’ বিশ্বব্যাপী শুধু তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করেনি, ব্যাপক স্বীকৃতিও লাভ করেছিল। এমন কি পাকিস্তানেও। যার ফলে বাংলাদেশের অনুকূলে আন্তর্জাতিক বিশ্ব জনমতের জোয়ার ঘোরাতেও সাহায্য করেছিল। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের গণহত্যার সত্যনিষ্ঠ প্রতিবেদনের জন্য অ্যান্থনী মাসকারেনহাস গ্রানাভা টিভি সংস্থার ‘জেরাল্ড বেরি’ পুরস্কার এবং ইন্টারন্যাশনাল পাবলিশিং কোম্পানীর বিশেষ পুরস্কার লাভ করেন। লন্ডনের সানডে টাইমস্ পত্রিকায় সুদীর্ঘ ১৪ বছর সক্রিয় কর্মজীবনের শেষে তিনি ফ্রি-লেন্স লেখক হিসাবে কাজ করতেন।
অ্যান্থনী মাসকারেনহাস বাংলাদেশের মানুষদের জন্য অসীম ভালবাসা এবং গভীর অর্ন্তদৃষ্টি সহকারে একটা বিশেষ কর্তৃত্বপূর্ণ ভঙ্গীতে লেখেন। সুপ্রতিষ্ঠিত কর্মজীবন, ঘরবাড়ী, স্ত্রী, পাঁচ ছেলেমেয়ে এমন কি নিজের সোনালী ভবিষ্যতকে জলাঞ্জলী দিয়েছিলেন-বাংলাদেশের গণহত্যা বিষয়ে প্রকৃত সত্যকে উদ্ঘাটন করার জন্য। ১৯৯৬ সালের ৬ই ডিসেম্বরে অ্যান্থনী মাসকারেনহাস হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে লন্ডনে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। উল্লেখ্য যে, তাঁর ‘রক্তের ঋণ’ বইটি বিশেষভাবে পাঠক সমাজে সমাদৃত।
-সম্পাদক
একশে টাইমস্