ইসরাইল-হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হয়ে উঠেছে। মরক্কোতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিশ্ব ব্যাংকের বার্ষিক সভায় বিশ্ব অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়।
বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের এই সভায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নররা অংশ নিচ্ছেন। তারা ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। গত ২০ বছর পর মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশে এই সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বলেন, আইএমএফ যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং তেল বাজারে এর প্রভাব নিয়ে খুব ঘনিষ্ঠভাবে নজর রাখছে। তিনি বলেন, যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাব সম্পর্কে এখনই মন্তব্য করা কঠিন, তবে বিশ্ব অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে এটি একটি নতুন সংকট।
জর্জিয়েভা বলেন, আইএমএফের বিশ্ব অর্থনৈতিক পূর্বাভাসে ইতিমধ্যেই দুর্বল বিশ্ব অর্থনীতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই পূর্বাভাস যুদ্ধের আগে প্রকাশিত হলেও যুদ্ধের প্রভাব বিবেচনা করে ২০২৩ সালের জন্য বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৩.০ শতাংশ থেকে ২.৯ শতাংশে কমিয়ে আনা হয়েছে। আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ পিয়ের-অলিভিয়ার গোরিনচাস বলেন, আইএমএফের গবেষণায় দেখা গেছে, তেলের দাম ১০ শতাংশ বাড়লে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ০.১৫ শতাংশ পয়েন্ট এবং মুদ্রাস্ফীতি ০.৪ শতাংশ পয়েন্ট বাড়তে পারে। আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা (আইইএ) বৃহস্পতিবার জানায়, যুদ্ধের কারণে তেল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটার ঝুঁকি সীমিত, তবে প্রয়োজনে তেল বাজারে হস্তক্ষেপ করতে তারা প্রস্তুত।
আইএমএফের মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য এশিয়া বিভাগের পরিচালক জিহাদ আজুর বলেন, তেলের দাম এখনও সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় কম। তিনি বলেন, যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাব সম্পর্কে এখনই স্পষ্ট ধারণা পাওয়া কঠিন, তবে এই পরিস্থিতি খুবই জটিল। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বন্দি ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য হামাসের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন। তুরস্কের বেসরকারি টিভি চ্যানেল হাবেরতুর্ক প্রথম এই খবর প্রকাশ করেছে। পরে ১১ অক্টোবর, বুধবার একটি সরকারি সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে এই খবরটি নিশ্চিত করেছে।
সূত্রটি এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেছে, ‘তারা জিম্মিদের মুক্তির জন্য আলোচনা শুরু করেছে।’ এদিকে তুর্কি বার্তা
সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, চলমান ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধে মধ্যস্থতা করার পরিকল্পনা শুরু করেছে তুরস্ক। ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংঘাত নিয়ে আরব নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন এরদোগান। বুধবার তিনি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেলমাদজিদ তেবোউনের সঙ্গে কথা বলেছেন।
এরদোগান ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ এবং ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের পাশাপাশি জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গেও কথা বলেছেন। আলোচনার প্রক্রিয়া নিয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘আঙ্কারা এই সংঘাতের দ্রুত অবসানের লক্ষ্যে তার ক্ষমতার মধ্যে সবকিছু করতে প্রস্তুত।’