মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে বৃহত্তর নোয়াখালী ঢাকা, কুমিল্লা ও ফরিদপুর জেলার অংশ বিশেষ নিয়ে গঠিত ২নং সেক্টরের অধিনায়ক ও পরে ‘কে’ ফোর্সের কমান্ডার হিসেবে যুদ্ধে বীরত্বপুর্ণ দায়িত্বপালন করেন মেজর খালেদ মোশাররফ।
২৫শে মার্চ ঢাকায় গণহত্যা শুরুর মাত্র কয়েকদিন আগে ১৯ শে মার্চ খালেদ মোশাররফকে ঢাকা সেনানিবাস থেকে চতুর্থ বেঙ্গল রেজিমেন্টের হেড কোয়ার্টার কুমিল্লায় বদলী করা হয়। সেখান থেকে ২৪শে মার্চ একটি ট্রুপসসহ সিলেটের শমসের নগরে যায়। ‘নকশাল’ ও ‘ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী দমনের মিথ্যা অজুহাতে পাঠানো হয় তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পাঠনো হয়। ২৬শে মার্চ ঢাকা ও অন্য কয়েকটি স্থানে পাক বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের বিবরণ জানতে পেরে সেদিনই প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেন। খালেদ মোশারফ গুরুতরভাবে আহত হলে মেজর এ.টি.এম হায়দার ২নং সেক্টরের কমান্ডার নিযুক্ত হন। মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা শহরে অপারেশনকারী গেরিলাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছিল ২নং সেক্টর। উল্লেখ্য যে, খালেদ কসবায় পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হন।
খালেদ মোশারফের জন্ম ১৯৩৭ সালের নভেম্বর মাসে। ১৯৫৭ সালে সেনাবাহিনীতে কমিশন পান তিনি। ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর তার নেতৃত্বে দেশের দ্বিতীয় সামরিক অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। তার কয়েকদিন পর একটি পাল্টা অভ্যুত্থানের মুখে, সেনা সদস্যদের গুলিতে মাত্র ৩৮ বছর বয়সে তিনি নিহত হন।
মুক্তিযুদ্ধের এই আলোচিত সমর নায়ক ‘৭১ মুক্তি যোদ্ধদের উৎসাহ উদ্দীপনা দেখে বলেছিলেন ‘ রিত্রটিং সেন্টারে লাইন দেখে আমি বুঝেঝি এ যোদ্ধারা জয়ী হবেই। কারণ পৃথিবী এমন স্বত:স্ফুর্তভাবে যুদ্ধে যোগ দেয়ার দৃষ্টান্ত আর কোথাও নেই। গণচীন থেকে শুরু করে উন্দোচীনের স্বাধীনতা যুদ্ধ, কোনটাই, বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের মত এ দৃষ্টান্ত রাখতে পারেনি।’
শাফায়েত জামিল রাজীব
-সম্পাদক
একুশে টাইমস্