বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩১ অপরাহ্ন
আহমদ ছফাকে আমি চিনতাম উনার শেষজীবনের কয়েকবছর। আমার পিতার শখ ছিল- বিভিন্ন ধরণের ম্যাগাজিন ও রাজনৈতিক ইতিহাসের বই পড়ার। উনি সাপ্তাহিক বিচিত্রা, সাপ্তাহিক রোববার, চিকিৎসা সাময়িকী, সাপ্তাহিক সুগন্ধা প্রভৃতি ম্যাগাজিন প্রতিনিয়তই আমাদের বাসায় রাখা হতো। যেইসময় আমি হয়তবা নাইন- টেনের ছাত্র ছিলাম। আমার শখ ছিল ম্যাগাজিনগুলো বিশদভাবে পড়ার নেশা।
যেই সময়ে, আমি এস.এস.সি পাশ ও করিনি- তবুও আহমদ ছফার বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ব্যাঙ্গাত্বক কলাম পড়ে, ভক্ত হয়েছিলাম জনাব ছফার।
মোদ্দা কথা হলো- আহমদ ছফা ছিলেন একজন নির্ভীক লেখক ও আপোষহীন কলমযোদ্ধা। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়, উনি কবি আসাদ চৌধুরীর সাথে কলকাতার উদয়ন মেসে থাকতেন এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে পশ্চিমবাংলায় জনমত সৃষ্টির ক্ষেত্রে বিশেষ অগ্রণী ভূমিকা রাখতেন। বাহাত্তর সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে মাস্টার্স করে- বাংলা একাডেমীর বৃত্তি নিলেন। জনাব ছফা জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক স্যারের তত্ত্বাবধানে পি.এইচ.ডি করার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু প্রতিবাদী ও পরোপকারী আহমদ ছফা থিথিস সম্পন্ন করেন নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক হলের আবাসিক ছাত্র আহমদ ছফা সর্বক্ষন ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াতেন ও পরিচিত ছাত্রদের উপকার করার চেষ্টা করতেন। এই প্রসঙ্গে একটি কথা না বললেই নয়- এ দেশের বিখ্যাত উপন্যাসিক হুমায়ুন আহমেদ মহসিন হলেন আবাসিক ছাত্র এবং তখন উনার লেখার দক্ষতা ও বৈচিত্র্য দেখে আহমদ ছফা মুগ্ধ হন। তখন হুমায়ুন রচনা করেন তাঁর প্রথম ও কালজয়ী সাহিত্যকর্ম ‘নন্দিত নরকে’ উপন্যাসটি। কিন্তু নবীন লেখক হুমায়ুন আহমেদের লেখা কোন প্রকাশনী ছাপাতে রাজি নয়। এ কথাশুনে আহমেদ ছফা তাঁর পরিচিত প্রকাশনী সংস্থা মওলা প্রকাশনীর কাছে গিয়ে হুমায়ুন আহম্মেদের নন্দিত নরকে উপন্যাসটি ছাপাবার ব্যবস্থা করেন। ছাপানোর বইটি ভীষন জনপ্রিয়তা পায়। তারপর হুমায়ুন আহমেদকে পিছনে থাকাতে হয়নি।
শাফায়েত জামিল রাজীব
সম্পাদক
একুশে টাইমস্ নিউজ মিডিয়া